নিজস্ব প্রতিবেদক:
রংপুরের পীরগঞ্জে ঘটে গেছে এক মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড। দেলোয়ারা বেগম নামের এক নারীকে হত্যার দেড় মাস আগেই তার পাঁচ বছর বয়সী কন্যা সায়মাকে হত্যা করে মাটিতে পুঁতে রাখার অভিযোগ উঠেছে আতিকুল ইসলাম (৩৫) নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে শিশু সায়মার মরদেহ উদ্ধার হওয়ার পর স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা অভিযুক্ত আতিকুল ইসলামের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি উপজেলার চতরা ইউনিয়নের বড় বদনাপাড়া এলাকার এক মরিচখেত থেকে মাথাবিহীন এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া যায়, নিহত নারী নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার দেলোয়ারা বেগম। তিনি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের এক ব্যক্তির সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন, তবে পরে তাদের বিচ্ছেদ হয়।
নিহতের সঙ্গে অভিযুক্ত আতিকুল ইসলামের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল এবং তারা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান-বাজনা করতেন। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে আতিকুল দেলোয়ারা বেগমকে হত্যার কথা স্বীকার করে এবং তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ৮ ফেব্রুয়ারি করতোয়া নদীর টোংরারদহ এলাকা থেকে দেলোয়ারার কাটা মাথা উদ্ধার করা হয়।
এরপর দেলোয়ারা বেগমের সাবেক স্বামী পুলিশকে জানান, তার পাঁচ বছর বয়সী মেয়ে সায়মাও মায়ের সঙ্গে ছিল। তদন্তের একপর্যায়ে রোববার সকালে আতিকুল ইসলামের বাড়ির পাশের গাছের বাগানে পুঁতে রাখা সায়মার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
শিশু সায়মার মরদেহ উদ্ধারের খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পরে বিক্ষুব্ধ জনতা অভিযুক্ত আতিকুল ইসলামের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। পীরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের লিডার মোকলেছুর রহমান জানান, তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিন-চারটি টিনশেড ঘরে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে এক ঘণ্টারও বেশি সময় ব্যয় করেন।
পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ ফারুক জানান, অভিযুক্ত আতিকুল ইসলাম শিশু হত্যার কথা স্বীকার করেছে। নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচারের দাবিতে স্থানীয়রা বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছেন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
ছবি: ঢাকা পোস্ট