রিয়াদুন্নবী রিয়াদ নিজস্ব প্রতিবেদক:
রংপুরের পীরগাছা উপজেলায় উন্নয়নের নামে কাগুজে প্রকল্প দেখিয়ে কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের দাবি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্টরা বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পীরগাছা উপজেলা পরিষদের রেজুলেশনে পারুল ইউনিয়নের তিনটি স্থানে গণশৌচাগার নির্মাণের জন্য ১ লাখ ৫৪ হাজার ৭০০ টাকা বরাদ্দ দেখানো হয়। তবে বাস্তবে এসব শৌচাগারের কোনো অস্তিত্ব নেই।এছাড়াও, ইটাকুমারি ইউনিয়ন পরিষদের নিরাপত্তা জোরদারে ১ লাখ ৬৪ হাজার ১০০ টাকা ব্যয়ে আইপিএস, মনিটর ও সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কথা থাকলেও কেবল ছয়টি ক্যামেরা এসেছে, যা এখনও কার্টুনবন্দী অবস্থায় রয়েছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, এগুলো যে কোনো সময় বিক্রি হয়ে যেতে পারে।স্থানীয়দের অভিযোগ, ক্ষমতাসীন দলের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির ছত্রছায়ায় থেকে প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে। কল্যাণী ইউনিয়নের তরণীর ভিটা কবরস্থান ও তৈয়ব মৌজার বালাচাটা হাফিজিয়া মাদ্রাসার নামে বরাদ্দ থাকলেও বাস্তবে এমন কোনো প্রতিষ্ঠান নেই বলে স্থানীয় ইউপি সদস্যদের দাবি।এক ইউপি সদস্য বলেন, "আমাদের এলাকায় বালাচাটা হাফিজিয়া মাদ্রাসা বলে কিছু নেই। "এছাড়াও, এলজিইডির ২৫০০+ মিটার সড়ক সংস্কারের কাজে পুরাতন ইট ও খোয়া ব্যবহার করে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করেছেন, রাস্তার জন্য নির্ধারিত সামগ্রী ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যোগসাজশে আত্মসাৎ করা হয়েছে।স্থানীয়রা প্রশ্ন তুলেছেন, এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে প্রশাসন নীরব কেন? তারা দ্রুত তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুল হক সুমন বলেন, "উপজেলায় কোনো অনিয়ম হয়নি, সব প্রকল্প সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা হয়েছে।" তবে গণশৌচাগারের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে, তিনি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল দপ্তর থেকে তথ্য নেওয়ার পরামর্শ দেন।জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী সানোয়ার মোরশেদ বলেন, "ওই গণশৌচাগার আমার দপ্তরের কাজ নয়। নির্বাহী কর্মকর্তা স্যার কেন আমার কথা বলেছেন, তা আমি জানি না।"স্থানীয়রা এসব অনিয়মের সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।