নিজস্ব প্রতিবেদক, গঙ্গাচড়া (রংপুর):
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার বাগপুর আলী প্রামানিক উচ্চ বিদ্যালয়ে পারফরমেন্স বেজড ফর সেকেন্ডারি ইনস্টিটিউশন (PBSS) স্কিমের আওতায় ৫ লাখ টাকার সরকারি অনুদানের অনিয়ম প্রমাণিত হলেও তদন্ত কার্যক্রমে গড়িমসি এবং পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছে। ফলে তদন্তের নিরপেক্ষতা ও কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা।
২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদ তামান্নার নেতৃত্বে প্রথম তদন্তে অনুদানের অর্থ যথাযথভাবে ব্যয় না হওয়ার প্রমাণ মেলে। ওই তদন্তে প্রকাশ, বইপত্র, শিক্ষা উপকরণ, টিউবওয়েল, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যাম্প নির্মাণ এবং সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সহায়তা খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ সঠিকভাবে ব্যবহৃত হয়নি। বিশেষ করে, প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য বরাদ্দকৃত ৫০,০০০ টাকা এবং সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সহায়তায় নির্ধারিত ৭৫,০০০ টাকার অনিয়মে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে।
কিন্তু এরপর ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউএনও বদলির পর গঠিত নতুন তদন্ত কমিটির কার্যক্রম নতুন করে বিতর্ক তৈরি করেছে। অভিযোগকারীদের অধিকাংশই নির্ধারিত শুনানিতে অনুপস্থিত থাকেন। কেউ কেউ অভিযোগ করেন, তাঁদের অনুমতি ছাড়াই নাম ব্যবহার করে অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। ফলে তদন্ত দল সরজমিনে না গিয়ে শুধুমাত্র অনুপস্থিতির ভিত্তিতে প্রতিবেদন জমা দেয়।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক, উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা মাহফুজার রহমান বলেন, আমরা অভিযোগকারীদের চিঠি দিয়েছিলাম। কিন্তু কেউই উপস্থিত হননি। দুজন এসে বলেছেন, তাঁরা কিছুই জানেন না। তাই আমরা পরিদর্শনে যাইনি।
এমন ঘটনায় হতাশ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন স্থানীয়রা। একজন বাসিন্দা বলেন, চোখের সামনে অনিয়ম হলেও তদন্তে যদি এমন গাফিলতি চলে, তাহলে আর শিক্ষাক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ফেরানো সম্ভব নয়।
বর্তমান ইউএনও মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, স্থানীয় জনগণের স্বার্থে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করার চেষ্টা থাকবে। নতুন করে প্রয়োজন হলে নিরপেক্ষ তদন্ত দল গঠন করা হবে।
স্থানীয়রা বলছেন, বারবার তদন্ত করেও যদি কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তবে অনিয়মের এই চক্র কখনও ভাঙবে না। ফলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতি জবাবদিহিতা ও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান উঠেছে।