নিজস্ব প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ সরকারের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত গেজেট অনুযায়ী, দেশের সকল লাইসেন্সপ্রাপ্ত মিল, ব্যবসায়ী ও ডিলারদের লাইসেন্স নবায়নের সর্বশেষ সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ জুন ২০২৫। নির্দেশনায় স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, সময়মতো নবায়ন না হলে ইস্যুকৃত লাইসেন্স বাতিল হয়ে যাবে।তবে মাঠপর্যায়ে এই নির্দেশনা বাস্তবায়নে দেখা যাচ্ছে রহস্যজনক অনীহা।
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তার কার্যালয়ে খাদ্যবান্ধব লাইসেন্স নবায়নের জন্য গেলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আবেদনকারীদের ফিরিয়ে দিচ্ছেন। তারা দাবি করছেন, “উচ্চতর কর্তৃপক্ষ নবায়ন করতে নিষেধ করেছেন।”
তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো—এই নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে কোনো লিখিত নির্দেশনা বা নথিপত্র দেখাতে পারেননি তারা। পুরো বিষয়টি মৌখিকভাবে জানানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন একাধিক লাইসেন্সধারী ব্যবসায়ী।
স্থানীয় ডিলার মোজাম্মেল হোসেন বলেন, সরকার বলছে নবায়ন না করলে লাইসেন্স বাতিল হয়ে যাবে। কিন্তু উপজেলা অফিসে গেলে বলে, উপরের আদেশ এসেছে। আমরা ভ্যাটসহ সবকিছু ঠিকমতো দিচ্ছি, তবুও গ্রহণ করছে না। লিখিত কোনো নিষেধাজ্ঞাও দেখায় না।
ডিলার নজরুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছর সময়মতো নবায়ন করি। এবার গেলে বলে, ‘উপর থেকে না করেছে’। কিন্তু আমাদের কাছে কোনো নোটিশ আসে নাই। কালকে নবায়নের সময় শেষ হয়ে গেলে আমাদের লাইসেন্স বাতিল হলে কী হবে?
একই অভিযোগ করেন ডিলার হুমায়ূন কবির লিজু। তিনি বলেন, মৌখিক কথা বলে কী হবে? আমরা আইনি নথি চাই। সরকার যেটা বলছে, অফিসে সেটাই কার্যকর হওয়া উচিত।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের ৮ মে ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লাইসেন্স নবায়ন না করলে তা বাতিল বলে গণ্য হবে। অথচ উপজেলা পর্যায়ে এই নির্দেশনা কার্যকর না হওয়ায় প্রশাসনিক সমন্বয়হীনতা ও বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও ডিলাররা বলছেন, যদি সত্যিই কোনো কারণ থাকে যার জন্য নবায়ন স্থগিত করা হয়েছে, তাহলে তা লিখিতভাবে জানাতে হবে। অন্যথায় সময়মতো নবায়ন করতে না পারায় যদি লাইসেন্স বাতিল হয়, তাহলে এর দায় কে নেবে?
এ বিষয়ে গঙ্গাচড়া উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা উম্মে কুলসুমা খাতুন বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নবায়ন করতে নিষেধ করেছেন।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. সালেহ আজিজ বলেন, আমি মৌখিকভাবে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছি। আপনি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ভালো হয়। এ অবস্থায়, দ্রুত লিখিত ব্যাখ্যা প্রকাশ ও কেন্দ্রীয় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের জরুরি হস্তক্ষেপ চেয়ে গঙ্গাচড়ার ব্যবসায়ীরা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।