আশরাফুল ইসলাম গংগাচড়া (রংপুর):
রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার মর্নেয়া ইউনিয়নে চাঁদাবাজি ও নারীর প্রতি সহিংসতার অভিযোগ উঠেছে জাতীয় পার্টির স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতার বিরুদ্ধে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সাবেক সংসদ সদস্য মশিউর রহমান রাংগার ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত মৃত মনছুর আলীর পুত্র রাশেদুল ইসলাম শুভ দীর্ঘদিন ধরেই এলাকার নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।
স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাশেদুল সরকারি আবাসন প্রকল্প (গুচ্ছগ্রাম) কেন্দ্র করে চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা ও জুয়ার সাম্রাজ্য গড়ে তোলে। ‘জুলাই বিপ্লব’ পরবর্তী সময় কিছুদিন আড়ালে থাকলেও সম্প্রতি আবারও এলাকায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে সে।
সর্বশেষ অভিযোগ উঠেছে, মর্নেয়া ইউনিয়নের ভাংগাগড়া বাজারের ইজারাদার হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর রাশেদুল ইসলাম স্থানীয় ব্যবসায়ী মোঃ আনারুল ইসলামের কাছে অবৈধভাবে চাঁদা দাবি করেন। মোঃ আনারুল জানান, বাজার সংলগ্ন তার বাড়ি ও দোকানের জন্য অতীতে কোনো ইজারাদার চাঁদা দাবি করেনি। কিন্তু রাশেদুল দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তিনি তাকে মোটা অঙ্কের টাকা দিতে বাধ্য করার চেষ্টা করছেন।
ঘটনার বর্ণনায় জানা যায়, গত ১৭ জুন দুপুরে বাড়ির মালিক আনারুল ইসলাম বাড়িতে না থাকায় অভিযুক্ত রাশেদুল তার কয়েকজন সহযোগীসহ বাড়িতে হানা দেন। তখন বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন আনারুলের স্ত্রী মোছাঃ ফারজানা। অভিযোগ অনুযায়ী, রাশেদুল ও তার সহযোগীরা ফারজানাকে গালিগালাজ ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। ফারজানার দাবি, তাকে টেনে হিচড়ে বাইরে বের করে আনা হয়, কিল-ঘুষি মারা হয় এবং স্পর্শকাতর স্থানে আঘাত করা হয়।
এছাড়াও তাদের দোকানের ক্যাশবক্স থেকে ৩৮ হাজার ৬০০ টাকা লুট করে নেওয়ার অভিযোগ করেছেন আনারুল। দোকান ভাঙচুর করে আনুমানিক ২০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলেও তিনি জানান।
এ বিষয়ে প্রথমে স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়ে আনারুল গংগাচড়া মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তিনি বলেন, “রাশেদুলের একটি বাহিনী গুচ্ছগ্রামে অবৈধভাবে ঘর দখল করে আছে। তাদের অত্যাচারে আমরা দিশেহারা।”
এলাকাবাসীর দাবি, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ছাড়া এই চক্রকে থামানো সম্ভব নয়। গংগাচড়ায় আবারও ফ্যাসিবাদী দমননীতি ও সন্ত্রাসী দখলদারিত্বের পুনরুত্থানে সাধারণ মানুষ ভীত ও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।